বন্ধ করো!
তোমাদের সংস্কার
আমাদের গলায় আটকে আছে।
আমরা আর কাঁপা কাঁপা গলায় কথা বলবো না-
বলবো উচ্চকন্ঠে,
ঘুষি মেরে তোমার টেবিলে!
আর এই কবিতা?
এই কবিতা কোনও “শৈলী” কিংবা “আঙ্গিক” প্রদর্শনের জন্য নয় -
এই কবিতা লেখা হয়েছে পেট ভরা ক্ষুধার গন্ধে,
গলা চেপে ধরা বাস্তবতায়,
যে বাস্তবতা ফর্ম ফিলাপ চেনে না,
চেনে বাঁচার ছটফটানি।
বছর তো গড়ালো, মাফিয়াদের
গাড়ির ধোঁয়া মিলিয়ে গেছে শূন্যে;
ওদের সমূহ পদচিহ্ন, ঝাঁট দিয়ে তো
মুছে ফেলেছি এই আমরাই।
তোমরা এলে -
বললে, “নতুন সূচনা”।
আমরা দেখলাম -
আকাশের রং বদলেছে, আমাদের পৃথিবীর না।
অধিকারের নামের গাছটা আজও মরে আছে,
আর তোমরা, সরকার, তাতে সোনা-মোড়ানো পাতা গেঁথে ছবি তুলছো।
তোমরা বলো - “সংস্কার চলছে!”
আমরা দেখি সার্কাস:
মঞ্চে নাচে কমিশনের পুতুল,
ডান হাতে পেন, বাঁ হাতে রাবার -
“এটি বাদ দিই? জনগণ? না, ওরা কী বুঝে?”
একটা শিশু দাঁড়িয়ে আছে মাঠে,
সে জানে না “অধিকার” বানানে ‘দ’ না ‘ধ’ হবে;
কিন্তু ভাতের অভাবে তার পেটের চিৎকারের
সকল শব্দ ও বাক্য সে সঠিক জানে!
একটা বৃদ্ধা হাসপাতালের বারান্দায় বসে -
দেখে গেটে সাঁটানো সংস্কারের পোস্টার;
কিন্তু না ডাক্তার, না ওষুধ, সে কিছুই পায় না।
আর তোমার সহকর্মী?
বলছেন, “দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে” -
ঠিক যেমন ছায়া হ্রাস পায়?
যখন সূর্য খাড়া হয়ে দাঁড়ায় মাথার ওপরে -
কিন্তু গরমে মানুষ পুড়ে যায়?
তোমরা কি তা দেখতে পাও?
এই নতুন সরকার
শব্দময়, একটা জার্গনের কারখানা -
তারা "উন্নয়ন", "সমতা", "অংশগ্রহণ"
এইসব শব্দ ছাপায় চকলেট কাগজে -
আমরা মুখে দিই - ভেতরটা ফাঁপা।
তোমরা বলো,
"সময় লাগবে",
আমরা বলি,
"আমরা মরছি প্রতিটি সময়ে।"
বলো তো -
তোমার এই সংস্কারের চাকা
ঘোরে কোন দিক বরাবর?
সেটা কি নব্য-ঔপনিবেশিকতার
ডিজাইনার ভার্সন?
আমরা আর চাই না বোর্ড রুমে বসে বিপ্লব।
আমরা চাই হাঁসফাঁস করা মানুষের
বেঁচে থাকার জায়গা।
আমরা চাই অধিকার -
না, “সম্ভাব্য অধিকার” নয়,
না, “আলোচনার অধিকার” নয়।
আমরা চাই যেটা জন্ম থেকেই আমাদের,
যেটা তোমরা হাইজ্যাক করেছ
ফাইল নোট আর সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
এই কবিতা আগুন।
এই কবিতা তোমাদের কফিনে পেরেক ঠুকবে।
এই কবিতা কাঁদে না - কামড়ে ধরে।
তোমরা যদি না পারো কিছু দিতে -
তাহলে এই কবিতা তোমাকে ছিঁড়ে খাবে,
এবং রক্ত-ঘাম মুছে আমরা আবার লিখবো গ্রাফিতি: “স্বাধীনতা মানে অধিকার”।
২৬/০৮/২০২৫
জাহানাবাদ এক্সপ্রেস
(নড়াইল এর পথে)