কানাডার টরন্টোতে জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর আয়োজনে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো তৃতীয় জালালাবাদ মেলা। সকাল থেকে শুরু হওয়া এই মেলা প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে বিকেলের পড়ন্ত সূর্যে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে সিলেটি তথা বাঙালিদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। পুরো মাঠ যেন এক খণ্ড সিলেটে রূপ নেয়। মেলায় সুদূর আমেরিকার বাফেলো ও মিশিগান থেকেও সিলেটিরা অংশগ্রহণ করেন।
২২ জুন, টরন্টোর ওকরিজ পার্কে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১১টায় মেলা শেষ হয়। এতে খাবার, কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্যের মোট ৭০টি স্টল ছিল।
সিলেটবাসীকে শুভেচ্ছা জানাতে মেলায় উপস্থিত ছিলেন কানাডার ট্রেজারি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রী শাফকাত আলী, এমপিপি ডলি বেগম, স্কারবরো সাউথ ওয়েস্টের সিটি কাউন্সিলর পার্থি কান্ডাভেলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। অতিথিরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আয়োজকদের হাতে শুভেচ্ছাবার্তা ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
বিকেলে শুরু হয় আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যেখানে কানাডা প্রবাসী শিল্পীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। রাতের পর্বে বাংলাদেশের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ তাঁর পরিবেশনায় উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে তোলেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে অনুষ্ঠিত হয় জালালাবাদ মেলার অন্যতম আকর্ষণ র্যাফেল ড্র, যার পরিচালনায় ছিলেন মনসুর আহমেদ।এই ড্র-তে প্রথম পুরস্কার ছিল একটি সার্টিফায়েড মের্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ ফেস্টিভ্যালের টাইটেল স্পনসর ব্যারিস্টার আরিফ, “পাওয়ার্ড বাই স্পনসর মোর্শেদ নিজাম ও ব্যারিস্টার ওমর জাহিদ, গাড়ির স্পনসর ও টরন্টোর খ্যাতনামা রিয়েলটর এবাদ চৌধুরী, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর সভাপতি মাহবুব চৌধুরী রনি, সাধারণ সম্পাদক মেহেদি মারুফ, মেলার আহ্বায়ক ইলিয়াছ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ প্রমুখ।
সম্মানিত অতিথি মন্ত্রী শাফকাত আলী, যিনি বর্তমানে কানাডার ট্রেজারি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট, ফেডারেল ও লিবারেল সরকারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, "বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকেই আমার উপস্থিতি। আপনাদের অংশগ্রহণেই এই মেলা সফল হয়েছে। এই ধরনের আয়োজন কমিউনিটিকে একত্র করে, সম্পর্ক গড়ে তোলে।"
এমপিপি ডলি বেগম বলেন, "এই মেলার মাধ্যমে বাংলাদেশি তথা সিলেটি সংস্কৃতি উপস্থাপন করা হয়, যা নতুন প্রজন্মকে আমাদের কৃষ্টি ও ঐতিহ্য জানতে সাহায্য করে। আমি আয়োজক, স্পনসর, শিল্পী ও দর্শকদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।"
এই ঐতিহ্যবাহী মেলা শুধু বিনোদনের নয়, বরং প্রবাসে বসবাসরত সিলেটিদের মধ্যে ঐক্য, সংস্কৃতি ও পরিচয় সংরক্ষণের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর এই সাফল্য প্রমাণ করে যে, একটি সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি কীভাবে দেশের সংস্কৃতি ও গৌরবকে বিশ্বের মাটিতে তুলে ধরতে পারে। ভবিষ্যতে এধরনের আরও আয়োজনের প্রত্যাশায় উপস্থিত সকলে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন হৃদয়ে আনন্দ ও গর্বের অনুভূতি নিয়ে।