দীর্ঘদিন পর পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের নেতৃত্বে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে প্রাথমিক আলোচনার পর আগামী সপ্তাহে ফের বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বৈঠকের পর হোয়াইট হাউস বলেছে, আলোচনাটি 'খুবই ইতিবাচক এবং গঠনমূলক' ছিল। হোয়াইট হাউসের মতে, ট্রাম্পের দূত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, যদি সম্ভব হয়, তাহলে সংলাপ এবং কূটনীতির মাধ্যমে আমাদের দুই দেশের পার্থক্য সমাধানের জন্য ট্রাম্পের কাছ থেকে নির্দেশনা রয়েছে।
ওমানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আনা এসক্রোগিমা একটি বিবৃতিতে বলেছেন, বিশেষ দূত উইটকফের সরাসরি যোগাযোগ পারস্পরিক উপকারী ফলাফল অর্জনের দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেছেন। উভয় পক্ষ আগামী শনিবার বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বলেছেন, আমি মনে করি (আলোচনা) 'ঠিকঠাক চলছে'। তবে 'যতক্ষণ না আপনি এটি সম্পন্ন করেন, ততক্ষণ কিছুই গুরুত্বপূর্ণ নয়' বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির 'পুরোপুরি ধ্বংস' চায়। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ সম্প্রতি বলেছিলেন, 'পুরোপুরি ধ্বংস...ইরানকে তার কর্মসূচি এমনভাবে ছেড়ে দিতে হবে, যাতে পুরো বিশ্ব তা দেখতে পায়। এটি ছেড়ে দাও, নইলে পরিণতি ভোগ করতে হবে।'
তবে গতকাল ওমানে ওয়াশিংটন-তেহরান বৈঠকের পর নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করার পরামর্শ দেননি। বরং দেশটির বিদ্যমান উপকরণগুলো যেন অস্ত্রে পরিণত না করা হয়, সেদিকে মনোনিবেশ করা হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে হামাস, হিজবুল্লাহ এবং হুথিদের মতো সংগঠনগুলোর সঙ্গে তেহরানের আঞ্চলিক নীতির কথাও আলোচকরা উল্লেখ করেননি।
২০১৮ সালে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০১৫ সালের ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। তিনি তেহরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইরান চুক্তি মেনে চলে। তবে পরে তারা ধীরে ধীরে চুক্তির বাধ্যবাধকতা কমিয়ে ফেলে। ইরানের দাবি, চুক্তিতে সই করা অন্যান্য দেশগুলোও তেহরানের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।