ঢাকা, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫
The News Diplomats
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী :
Publish : 06:25 PM, 06 April 2025.
Digital Solutions Ltd

মোদীর কাছ থেকে পদক গ্রহণের ছবি দিয়ে জাতিকে কি বুঝালেন ড. ইউনূস স্যার

Publish : 06:25 PM, 06 April 2025.
মোদীর কাছ থেকে পদক গ্রহণের ছবি দিয়ে জাতিকে কি বুঝালেন ড. ইউনূস স্যার

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হাতে নিজের ছবি তুলে দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

হাসিনার সময়ের ভয়ানক সাইবার দুর্বৃত্ত বলছি

রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সাহেব ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তার ১০ বছরের পুরোনো একটি ছবি উপহার দিয়েছেন। যে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৫ সালে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে‘হাসিনার সময়ের ভয়ানক সাইবার দুর্বৃত্ত বলছি’ একটি পদক গ্রহণ করছেন। ইউনুস সাহেবের প্রেস সচিব যাকে আমি হিরো আলমের ভাই শফিকুল আলম বলি। সেই শফিকুল আলম জাতিকে বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের ফলপ্রসূ আলাপ আলোচনা হয়েছে। ইউনুস সাহেব শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছেন। শেখ হাসিনার সময়ে দেশের স্বার্থে কথা বলায় তার দল ও সরকারের চোখে প্রবাসে থাকা ‘একজন ভয়ানক প্রধান সাইবার দুর্বৃত্ত’ হিসাবে চিহ্নিত ছিলাম। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হাজারও লাশের উপর দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্ত্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে আবারও কলম ধরতে হবে তা কখনও কল্পনার মধ্যে ছিলো না।
অন‍্যদিকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স‍্যার তার ফেসবুক পেইজে ইউনুস ডিপ্লোমেসীকে তুলে ধরে লিখেছেন নরেন্দ্র মোদীকে আবু সাঈদের ছবি উপহার দিলে চানক‍্যের ভাষায় ‘সোজা গাছ আগে কাটা পড়ে’। আবু সাঈদের ছবি দিলে নাকি হিরোইজম হইতো------। লাভ লাভ। আমার এই আসিফ নজরুল স‍্যারকে দেখলেই কেমন যেন একটা ‘পলিটিক‍্যাল টাউট বাটপার’র মত লাগে। স্যরি, আমাকে ক্ষমা করবেন, আমার এমন ভাষা ব্যবহারের জন্য। আসিফ নজরুল স‍্যারের পোষ্টের নীচে দৈনিক মানবকণ্ঠর সাবেক সম্পাদক, শেখ হাসিনার সময়ে বিদেশে নির্বাসিত বিশিষ্ট সাংবাদিক দুলাল আহমদ চৌধুরী লিখেছেন, স্যরি আসিফ নজরুল স‍্যার, আপনার সাথে একমত হতে পারলাম না। প‍্যারিস থেকে নবস্বাধীন বাংলাদেশমুখী হওয়ার পর থেকে অধ‍্যাবদি যে ভাষায় বন্ধনা করে মানুষকে প্রতিবেশী বিদ্বেষী করে তুলেছেন প্রফেসর ইউনুস স‍্যার, ১০ বছর আগের ছবি তুলে দেয়ায় বিশ্বের সব চামচামী তার হাত দিয়ে হার মেনেছে।
হাজারো লাশের উপর দাড়িয়ে তিনি তার ১০ বছর আগের ‘চা ওয়ালা’র হাত থেকে নেয়া পুরস্কারের ছবি ফ্রেম করে বোগলদাবা করে নিয়ে মোদীজীর হাতে তুলে দিয়ে সেরা চামচার আসনে অধিষ্ঠিত হলেন। এখন ‘অবুঝ’ ছেলেরা কি শ্লোগান দিবে ‘দিল্লি না ঢাকা’? নজরুল স‍্যার, আপনি বাঙালীকে চানক‍্য ব‍্যাকরন দিলেন। জনগন কি বলছে, সাঈদের ছবি দিতে হবে? শুকিয়ে যাওয়া তিস্তার ছবি দিতে পারতেন…? আর কত কিছু। অথচ ব্যাংককে যে সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা স্যার গিয়েছেন, সেখানে অন্যান্য সকল দেশের সরকার প্রধানের হাতে প্রধান উপদেষ্টা স্যার শহীদ সাইদের কাভার ছবিসহ প্রকাশিত জুলাই আন্দোলনে নিয়ে প্রকাশ করা এ্যালবাম তুলে দিলেন। আর মোদীজীর হাতে তুলে দিলেন তার ‘স্বযন্তে’ রাখা ১০ বছর আগের প্রিয় ছবি। ধারাবাহিকভাবে তীর্ষক ভাষায় ভারত বিরোধী বক্তৃতা দিয়ে জনগণের কাছ থেকে ‘জনপ্রিয়তা’ অর্জন করে আজ কি প্রমাণ করলেন মাননীয় স্যার। আমারতো মনে হয়, চীন সফরের পর নাখোশ মোদীজীকে খুশি করতে তিনিও নির্লজ্জ্বভাবে চামচামিটা করলেন।
দুলাল আহমদ চৌধুরী আরো লিখেছেন, তিনি শেখ হাসিনার শাসনামলে কোনোদিন বঙ্গভবনে গনভবনে সাংবাদিক হিসেবে দাওয়াত পাননি কিংবা যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। এমনকি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস‍্যপদ পযর্ন্ত তাকে দেয়া হয়নি। আসিফ নজরুল স্যাররা ক্ষমতায় এসে সাংবাদিক হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করে এ্যক্রিডিটেশন বাতিল করেছেন দুলাল চৌধুরীর। দুলাল ভাই আমার বন্ধু মানুষ। সাংবাদিক হিসেবে তিনি সফল। আমি সেখানে ব‍্যর্থ। দুলাল ভাইর সাথে আমার অনেক জায়গায় বিরাট মিল রয়েছে। তিনি যা লিখেন তা অনেক সময় আমার মনের কথাগুলো লিখে দেন। দুলাল ভাই সর্বশেষ লিখেছেন এই ‘কুটনীতির কুটচাল’ পরামর্শ ইউনুস সাহবেকে কে দিয়েছে, এদেরকে দিয়ে অশ্বডিম্ব হবে।
এখন আমার কথা হচ্ছে শেখ হাসিনা দেশকে ভারতের কাছে তুলে দিয়েছে। দেশ বিক্রি করে দিয়েছে। ভারতের ২৬ লক্ষ লোক বাংলাদেশে চাকরী করে, ইত‍্যাদির গল্প যে আমরা এতদিন শুনে আসছিলাম তাহলে এসবই কি মিথ‍্যা? আসিফ নজরুল নামক একটা ‘পলিটিক‍্যাল বাটপার’র কাছ থেকে আমরা কি জবাব পাব? আরেকটা বিরাট ‘প্যরিস বাটপার’ সোস্যাল মিডিয়াটায় যে কি পরিমান গালাগালি আমদানি করেছে, আমি এতদিন তার ঐ গালাগালি শুনেছি। সে নিজে যে কতবড় বাটপার, তাকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম শাহবাগ আন্দোলনে তার কি ভুমিকা ছিল? এই জুলাই আগষ্ট বিপ্লবে জুলাই পযর্ন্ত ছাত্রদের আন্দোলনকে শেখ হাসিনা এবং ছাত্রলীগের আন্দোলন নাটক বলেছিল কিনা? এবং তার বিরুদ্ধে যে বাংলাদেশে ভেজাল ঔষুধ দিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগ রয়েছে সে বিষয়গুলো পরিস্কার করতে। কিন্তু সে করেনি। সে যাক, এখন সে জাতিকে জ্ঞান দান করে বিপ্লবের বানী শুনায়। আমি যেহেতু তার কাছ থেকে কোনো জবাব পাইনি, তাহলে ধরে নিব সে এসব অন‍্যায় কাজ করেছে!
বিএনপি নেতাদেরকে নিয়ে তার ভিডিও বার্তা কিসের জন‍্য, কার কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে করে আমি সব জানি। আমি ওসব প্রকাশ করতে চাইনি। তবে আমি যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি ক্ষমতার পরিবর্তনের সাথে সাথে দেখি নাবালকরাও দুর্নীতির সাথে জড়িত। এমনকি ইউটিউবাররাও বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা পয়সা ইনকাম করছে। নাবালকরাও জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দুর্নীতিতে। সে দিন ভিডিও ফুটেজে দেখলাম, কোন এক ছাত্র নেতার বাপ মোটর সাইকেল থেকে নেমে একজন লোককে কি জিজ্ঞেস করেছিল, তাতেই তাকে ধরে মাইর! আরক ছাত্রনেতা সারজিস না কি নাম সে নাকি সরকার পরিবর্তনের আগে হলে থাকতে হিমশিম খেয়েছে। এখন নাকি রাতারাতি নবাব সিরাজুদ্দৌলার নাতী বনে গেছে। বসুন্ধরাসহ দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী ব্যবসায়িদের সঙ্গে কারা আতত করেছে, প্রত‍্যকটি দুর্নীতিবাজের মুখোশ উম্মোচন করব ইনশাআল্লাহ। আবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হবে। মনে করেছিলাম শেখ হাসিনা দেশকে ধ্বসের শেষপ্রান্তে পৌছে দিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন দেখি ইউনুস স‍্যার সুযোগ খুজছেন ভারতের চামচামী করার। এই বাংলাদেশে কেউ সুযোগের অভাবে চরিত্রবান অর কেউ সময়ের অভাবে চরিত্রবান।
শেষ করি বৃটিশ সাবেক এক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা দিয়ে। দুর্দান্ড প্রভাবশালী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন টনি ব্লেয়ার। বৃটিশ গনমাধ‍্যম তাকে আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট বলে ডাকত। সেই টনি ব্লেয়ারের ফরেন সেক্রেটারি ছিলেন রবিন কুক। রবিন কুক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েই সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঘোষনা দিয়েছিলেন আজ থেকে বৃটেনে এ‍্যথিকেল ফরেন পলিসি চালু হলো। ঘোষনার একমাস যেতে না যেতেই বৃটেন জিম্বাবুয়ের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছিল। সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছিল মিঃ রবিন কুক একমাস আগের এ‍্যথিকেল ফরেন পলিসি কি একমাস যেতে না যেতেই হারিয়ে গেল। সেটির উত্তরে কি বলেছিলেন রবিন কুক তা এখানে লিখে পাঠকের ধৈয‍্যচুতি ঘটাতে চাইনা। পরবর্তীতে রবীন কুক তার ডায়রী সেক্রেটারিকে বিয়ে করে বৃটিশ রাজনীতিতে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন। বৃটিশ ও আমেরিকার রাজনীতিতে একটি বিষয় অত‍্যান্ত পরিস্কার যে আপনি আমার নেতা হবেন প্রধানমন্ত্রী হবেন সেক্রেটারি অব স্টেইট হবেন কোনো ধরনের ফাইজলামী দুর্নীতি করতে পারবেন না। আপনি থাকবেন ঈমামের মত। যা বলবেন সেখানে অনড় থাকতে হবে। সকালে এক কথা বিকেলে আরেক কথা বলবেন আপনাকে বরিস জনসনের মত বিদায় নিতে হবে। ইউনুসের সরকার এবং ইউটিউবারদের ইন্ডিয়া বিরোধী বক্তব্যে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। আমি কখনো কারো বিরুদ্ধে অতিরন্জিত করে কোনো কিছু বলা অপছন্দ করি। একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে আমার সম্পর্ক ততটুকু থাকবে যতটুকু আমার রাষ্ট্রের প্রয়োজন। বরিস জনসন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসতে বৃটিশ জাতীকে মিথ‍্যা তথ‍্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছিলেন। সময়ের বিবর্তনে বরিস জনসনকে বড় করুনভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। আসিফ নজরুলদের পলিটিক‍্যাল বাটপারি পরিস্কার হতে বেশীদিন লাগেনি। মাত্র আটমাসের মাথায় জাতীর কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে আরো অনেক কিছুই পরিস্কার হবে ইনশাআল্লাহ।
শেষ কথাঃ সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকারুজ্জামান নাকি ইন্ডিয়ার চামচামী করে, এক ইউটিউবার বাটপারের দিনের পর দিন বক্তব্যে আমি শুনেছি। সেই বাটপার এখন কি বলবে? এখন ইউনুস সাহেবকে কি বলবে?
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী, সভাপতি, ইউকে বাংলা প্রেসক্লাব
ব‍্যবস্হাপনা পরিচালক, চ‍্যানেল ইউরোপ আইপি টিভি। ৫ এপ্রিল ২০২৫ ইংরেজি।

https://vodbangla.com/details.php?newsid=606

OPINION বিভাগের অন্যান্য খবর

শিরোনাম ভারত-পাকিস্তান চাইলে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারে বাংলাদেশ শিরোনাম রপ্তানি, প্রবাসী আয় ও রিজার্ভ বৃদ্ধি সত্ত্বেও ‘অতি গরিব’ বাড়বে শিরোনাম রাজনৈতিক দলে সংস্কারের জরুরি আলাপ কেউই করছে না শিরোনাম এনসিপি নেতাদের দুর্নীতি ও বিতর্কিক কর্মকাণ্ডে সমর্থকরাও হতাশা শিরোনাম Trump poised to offer Saudi Arabia over $100 billion arms package শিরোনাম পাকিস্তানি অভিনেতা ফাওয়াদের ছবি নিয়ে বিতর্ক, কাশ্মীরে হামলার জের