Thursday, 07 August 2025
The News Diplomats
ডেস্ক রিপোর্ট :
Publish : 01:15 PM, 16 July 2025.
Digital Solutions Ltd

সেনাবাহিনী ও পুলিশের গুলিতে নিহত ৪

এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ ঘিরে লঙ্কাকাণ্ড, কারফিউ জারি

এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ ঘিরে লঙ্কাকাণ্ড, কারফিউ জারি

বুধবার দিনভর গোপালগঞ্জের খন্ডচিত্র

Publish : 01:15 PM, 16 July 2025.
ডেস্ক রিপোর্ট :

এনসিপির সমাবেশ পণ্ড # আওয়ামী লীগের হামলায় নাহিদ, সার্জিস, হাসনাতরা আশ্রয় নেন এসপি অফিসে # হামলার ভয়ে সেনাবাহিনীর এপিসিতে করে গোপালগঞ্জ ত্যাগ # শহরজুড়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মিদের দফায় দফায় সংঘর্ষ # অসংখ্য গুলিবিদ্ধ-আহত হাসপাতালে # জঙ্গি কায়দায় হামলার অভিযোগ নাহিদের

গোপালগ‌ঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এন‌সি‌পির) মার্চ টু গোপালগঞ্জকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সংঘর্ষের পর চার জনের মৃতদেহ সদর হাসপাতালে এসেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে পুলিশসহ আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। নিহতরা হলেন- গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮), টুঙ্গীপাড়ার সোহেল রানা (৩০) ও গোপালগঞ্জ সদরের ইমন (২৪)।


গোপালগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বেশ কয়েকজন হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এরমধ্যে চারজন মৃত ও পুলিশ-সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত রয়েছেন।
সমাবেশ ভুণ্ডুল ও এসপি অফিসে অবরুদ্ধ থাকার পর সেনাবাহিনী তাদের এপিসিতে করে এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সার্জিস আলম, নাসির পাটোয়ারী ও আখতার হোসনেসহ অন্যান্যদের গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় পৌছে দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিনব্যাপি ১৪৪ ধারা জারির পর রাত ৮ টা থেকে আগামীকাল বিকাল পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
নিহত দীপ্ত সাহার চাচা হাসপাতালে বলেন, দীপ্ত দুপুরের খাবার খেয়ে তাঁর দোকানে যাচ্ছিলেন। শহরের চৌরঙ্গীতে তাঁর পেটে গুলি লাগে।
নিহত রমজান কাজীর বাবা কামরুল কাজী বলেন, ‘আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলছে। আমার ছেলে তো কোনো দোষ করেনি। আমি আমার সন্তানকে কোথায় পাব?’
নিহত সোহেল মোল্লা গোপালগঞ্জ শহরের চৌরঙ্গী এলাকার কেরামত আলী প্লাজায় মোবাইল ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করেছেন একই মার্কেটের দোকানদার জনি খান।


এর আগে গোপালগঞ্জের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশ শেষে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, সমাবেশ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ঘিরে হামলা চালান। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এনসিপির নেতা-কর্মীরা অন্যদিক দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। হামলার ঘটনার পর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাদের (এনসিপি) বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
পুলিশের গাড়িতে আগুন:
এর আগে বেলা পৌনে ২টার দিকে সমাবেশ শুরুর আগে ২০০ থেকে ৩০০ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে এনসিপির সমাবেশস্থলে যান। সে সময় মঞ্চের আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে দ্রুত আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। একই সময়ে মঞ্চে ও মঞ্চের সামনে থাকা এনসিপির নেতা-কর্মীরাও দৌড়ে সরে যান। যাঁরা হামলা চালান, তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে এনসিপির নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেছিলেন। ওই সময় হামলাকারীরা মঞ্চের চেয়ার ভাঙচুর করেন, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন।


একপর্যায়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। এনসিপির নেতা-কর্মী ও পুলিশ এক হয়ে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। বেলা ২টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে সমাবেশ করে এনসিপি। সমাবেশ শেষে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ঘিরে হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগে এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে আগুন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট সড়কের সদর উপজেলার কংশুরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের গাড়ি পোড়ানোর একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, গাড়ি পোড়ানোর সময় সেখানে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের গোপালগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. পিয়ালকে লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। অন্য আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, 'আমরা পিয়াল ভাইয়ের সাথে আছি।'
সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে গোপালগঞ্জ ছাড়লেন হাসনাত-সার্জিসরা
গোপালগঞ্জে গিয়ে হামলার মুখে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে (এপিসি) করে সেখান থেকে বের হন। পরে তাঁরা সাঁজোয়া যানে করেই গোপালগঞ্জ ছাড়েন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। বুধবার বিকেলে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে সমাবেশ শেষে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ঘিরে হামলার ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
বিকেলে এনসিপির নেতারা যে সাঁজোয়া যানে করে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে বের হন, এমন কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।


ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাঁজোয়া যানে উঠছেন।
জেলা পুলিশ কার্যালয়ে অবস্থানের সময় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাদের (এনসিপি) বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন পরিস্থিতি ঠিক নেই।
১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এই কর্মসূচিকে ‘১৬ জুলাই: মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই পদযাত্রা ঘিরে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার উলপুর-দুর্গাপুর সড়কের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রাকিবুল হাসানের গাড়িতে হামলা করা হয়।
শহরের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশস্থলে বেলা পৌনে ২টার দিকে প্রথমবার হামলার ঘটনা ঘটে। তখন ২০০ থেকে ৩০০ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এনসিপির সমাবেশস্থলে গিয়ে হামলা চালান। সমাবেশ শেষ করার পর দ্বিতীয় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে বেলা পৌনে তিনটার দিকে। পরে জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। আজ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে হামলা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর জেলাটিতে আজ বুধবার রাত আটটা থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে। আগামীকাল সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে।


গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় গেছেন নাহিদ-সারজিসরা
গোপালগঞ্জ থেকে গাড়ি বহর নিয়ে খুলনায় পৌঁছেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) কেন্দ্রীয় নেতারা। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে গাড়িবহর নিয়ে তাঁরা খুলনা শহরে ঢোকেন। এর মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা খুলনা সার্কিট হাউসে এবং অন্য নেতারা একটি হোটেলে উঠেছেন।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন জানান, আজ রাত সাড়ে নয়টার দিকে খুলনা প্রেসক্লাবে প্রেস ব্রিফিং করা হবে। কেন্দ্রীয় নেতারা রাতে খুলনায় থাকবেন কিনা সে ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গোপালগঞ্জে আজ রাত ৮টা থেকে কারফিউ
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে হামলা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর জেলাটিতে আজ বুধবার রাত আটটা থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে। আগামীকাল সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। আজ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করার কথা জানিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রা*সীদের * ভেঙে দেওয়া হবে।’
উপদেষ্টা ফেসবুক পোস্টে আরও বলেছেন, ‘পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানগণ।’
এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের শাস্তি হবে, অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ বুধবার বিকেলে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজ গোপালগঞ্জে যে সহিংসতা করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, তরুণ নাগরিকদের শান্তিপূর্ণভাবে তাঁদের বৈপ্লবিক আন্দোলনের এক বছর পূর্তিতে স্মরণসভা করতে বাধা দেওয়া তাঁদের মৌলিক অধিকারের নির্লজ্জ লঙ্ঘন। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য, পুলিশ ও গণমাধ্যম বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়েছে। তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে এবং লোকজনকে সহিংস আক্রমণ করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সদস্যরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের শাস্তি হবে। অপরাধীদের অবশ্যই দ্রুত শনাক্ত করে পূর্ণ জবাবদিহিতার আওয়তায় আনা হবে। বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের ওপর এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই।
দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রশংসা করে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, এ ধরনের ক্ষতির হুমকি সত্ত্বেও যেসব শিক্ষার্থী ও লোকজন তাঁদের সমাবেশ চালিয়ে গেছেন, তাঁদের সাহস ও দৃঢ়তার প্রশংসা করছি আমরা।
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই বর্বরতার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা বিচারের মুখোমুখি হবে। এটা স্পষ্ট করছি যে আমাদের দেশে সহিংসতার কোনো জায়গা নেই। অবশ্যই ন্যায়বিচার হবে এবং তা হবেই।’
গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দিতে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে আসিফ মাহমুদ
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পরিস্থিতি তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। সেখানে আরও রয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।


আজ বুধবার বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করছেন। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা যায়। এদিকে আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তদারকি ও দিকনির্দেশনার কথা জানিয়ে এক পোস্টে জীবন-মৃত্যুর পরিস্থিতি না হলে গোপালগঞ্জে সাধারণ মানুষকে ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুব ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি ওই পোস্টে লেখেন, ‘গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ কেউ ঘর থেকে বের হবেন না।’
তিনি আরও লেখেন, ‘সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের ভেঙে দেওয়া হবে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানরা।’
এর আগে সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় কারফিউয়ের কথা জানানো হয়। বার্তায় বলা হয়, আজ রাত ৮টা থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া অস্থিরতা ও সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কারফিউ চলাকালে জনসাধারণের চলাচল সীমিত থাকবে এবং বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকবে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।

হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় হামলা করেছে আওয়ামী লীগ

‘আমরা কোন দিন কোন জেলায় যাব, এটা আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা, নিষিদ্ধঘোষিত সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জে আমাদের ওপর হামলা করেছে। গণ–অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় হামলা করে তারা।’ আজ বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে গাড়িবহর নিয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা গোপালগঞ্জ থেকে খুলনা শহরে ঢোকেন। এর আগে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে এনসিপির পথসভা শেষ হওয়ার পর আওয়ামী লীগের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান। এর আগে পথসভাস্থলে হামলা, পুলিশের গাড়িতে আগুন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় খুলনায় এসেছেন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা গোপালগঞ্জের মানুষের সমস্যার কথা শুনতে গিয়েছিলাম। সে বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির ভাবনা কী, তা জানাতে গিয়েছিলাম। সমাবেশ সফল হয়েছে। সেখান থেকে আমরা মাদারীপুরের দিকে যাওয়ার সময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা আমাদের গাড়িবহরে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়।’ 

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘এরা যে জঙ্গিতে রূপান্তরিত হয়েছে, তা দেশবাসীর কাছে আজ স্পষ্ট হয়েছে। ৫ আগস্টের পর গোপালগঞ্জ ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনসহ যাদের নামে মামলা হয়েছে, তারা সকলে গোপালগঞ্জে ছিলেন।’

নাহিদ ইসলাম জানান, আজকের ঘটনার কারণে মাদারীপুর ও শরীয়তপুর পথসভা স্থগিত করা হয়েছে। তবে কা�

BANGLADESH বিভাগের অন্যান্য খবর

শিরোনাম নতুন-পুরানের মিলনমেলায় টরন্টোর মর্নিংসাইড পার্ক যেন একখন্ড গোলাপগঞ্জ শিরোনাম প্রবাসী যোদ্ধার সম্মাননা পেলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাইদ আহমদ শিরোনাম ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করতে ইসিকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা শিরোনাম গণ–অভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে: ড. ইউনূস শিরোনাম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রক্ষায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর আত্মপ্রকাশ শিরোনাম ২৮ দফা জুলাই ঘোষণাপত্রে যা বললেন ড. ইউনূস