Sunday, 06 July 2025
The News Diplomats
ডেস্ক রিপোর্ট :
Publish : 08:10 AM, 20 June 2025.
Digital Solutions Ltd

ট্রাম্পের দুই সপ্তাহে যুদ্ধ কি থামবে?

ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ইরানের শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু

ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ইরানের শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু

Publish : 08:10 AM, 20 June 2025.
ডেস্ক রিপোর্ট :

ইরানের ‘শাসনব্যবস্থার প্রতীক’হিসেবে চিহ্নিত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এসব হামলার উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরান সরকারকে দুর্বল করে ফেলা। ওই বিবৃতির বরাত দিয়ে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, কাৎজ বলেছেন, ‘আমরা (ইরানের) শাসনব্যবস্থার সব প্রতীক ও জনগণের ওপর দমন-পীড়নের জড়িতদের, যেমন বাসিজ (মিলিশিয়া); এবং রেভল্যুশনারি গার্ডের মতো ক্ষমতার কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানব।’

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য ইসরায়েলের যুদ্ধনীতিতে একটি স্পষ্ট পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে—পরমাণু কর্মসূচির ওপর সীমিত হামলা থেকে এখন ইরান সরকারকে অস্থিতিশীল করার কৌশলের দিকে যাচ্ছে দেশটি।

ইসরায়েলের আগ্রাসন নিঃশর্তভাবে বন্ধই সংঘাত থামানোর একমাত্র উপায়: ইরানের প্রেসিডেন্ট

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন নিঃশর্তভাবে বন্ধ করাই এ সংঘাত বন্ধের একমাত্র উপায়। আজ শুক্রবার এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে পেজেশকিয়ান লিখেছেন, ‘আমরা সব সময় শান্তি ও স্থিতিশীলতা চেয়েছি। চলমান চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের অবসানের একমাত্র পথ হলো শত্রুর আগ্রাসন নিঃশর্তভাবে বন্ধ করা এবং জায়নিস্ট সন্ত্রাসীদের দুঃসাহসিক তৎপরতা চিরতরে বন্ধের সুনির্দিষ্ট নিশ্চয়তা।’
আল–জাজিরার খবরে বলা হয়, ইরানের প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর আগ্রাসন যদি থামানো না হয়, তাহলে ইরান আরও কঠোর জবাব দেবে। সেই জবাব এমন হবে, যা আগ্রাসনকারীকে এ দেশের ওপর হামলার জন্য অনুতপ্ত করবে।


ইসরায়েল হামলা চালিয়ে গেলে কারও সঙ্গে আলোচনা নয়: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী


ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, ইসরায়েল হামলা চালিয়ে গেলে তিনি কারও সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত নন। ইউরোপীয় দেশের নেতাদের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকে অংশ নিতে জেনেভা রওনা হওয়ার আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে এ কথা বলেছেন আরাগচি। খবর আল জাজিরার। আরাগচি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আমরা যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি, তারপর অন্যান্য দেশ নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখবে বলেই আমার মনে হয়।’
জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজ শুক্রবার জেনেভায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনা করতে যাচ্ছেন।
দুই সপ্তাহ সময় নিলেন ট্রাম্প, যুদ্ধ কি থামবে?
দ্বিতীয় সপ্তাহে পা দিয়েছে ইসরায়েল-ইরানের যুদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে যে প্রশ্নটি বার বার ঘুরে ফিরে আসছে, তা হলো- যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে যোগ দেবে? কী করবেন ট্রাম্প? এই প্রশ্নের জবাব দিতে দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছেন মার্কিন নেতা। আজ শুক্রবার রয়টার্স, সিএনএন, আল জাজিরাসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে আশাবাদ ও আশঙ্কা, উভয়ই প্রকাশ করা হয়েছে।
আট দিন ধরে ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন হামলার শিকার হয়েছে ইরান। পাল্টা জবাব দিতে নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদেরও একটি উল্লেখযোগ্য অংশ খরচ করেছে দেশটি। সব মিলিয়ে ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা আশা করছেন নিজেদের কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসবে তেহরান। যুক্তরাষ্ট্রের বেধে দেওয়া শর্ত মেনে পরমাণু চুক্তিতে সই করতে রাজি হবে আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।
উল্লেখ্য, ওই চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল স্থায়ীভাবে ইউরেনিয়াম পরিশোধন থেকে সরে আসা। এই শর্ত উড়িয়ে দেয় ইরান। তাদের দাবি, পরমাণু শক্তিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, গবেষণা ও চিকিৎসাসহ অন্যান্য শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের অধিকার বিশ্বের যেকোনো দেশেরই আছে এবং ইরান এর ব্যতিক্রম হতে পারে না।
গত কয়েকদিন ট্রাম্প বার বার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো মুহূর্তে ইসরায়েলের সঙ্গে হামলায় যোগ দিতে পারে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। যুদ্ধের অষ্টম দিনে এসে ট্রাম্প জানালেন, এই সিদ্ধান্ত নিতে তার দুই সপ্তাহ সময় দরকার।

নিউইয়র্কে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প বলে এসেছেন, তিনি যুদ্ধ চান না। নির্বাচনী প্রচারণায় দ্রুততম সময়ে ইউক্রেন-রাশিয়া ও গাজার যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া ট্রাম্পের নিজের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গেই বেমানান। এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা। হয়তো এ কারণেই কূটনীতিক সমাধানে যেতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলে দীর্ঘসময়ের জন্য বিদেশের মাটিতে সংঘাতে জড়াবে যুক্তরাষ্ট্র, যা ট্রাম্পের প্রাধান্যের বিষয় নয়।
ট্রাম্প বরাবরই বলে এসেছেন, হামাস-হিজবুল্লাহর চেয়ে চীনের অর্থনৈতিক আগ্রাসনকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখেন তিনি। ইরান-ইসরায়েলের জটিল পরিস্থিতির কূটনীতিক সমাধান পাওয়ার জন্য দুই সপ্তাহ যথেষ্ট কী না, তা নিয়ে বিশ্লেষকরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।


যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে ইরানের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে এ সপ্তাহের শুরুতে হোয়াইট হাউসে আলোচনা হয়। তবে শুক্রবার ইরানে অতর্কিত হামলা করে বসে ইসরায়েল। স্বভাবতই এতে এ ধরনের উদ্যোগের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
অপরদিকে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজ শুক্রবার জেনেভায় ইরানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তাদেরকে ইরানের কাছে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির সর্বশেষ শর্তগুলো সম্পর্কে ব্রিফিং করা হয়েছে। উইটকফের মাধ্যমে আসা প্রস্তাব ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শর্তগুলো তেহরান নাকচ করার পরই ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়।
নিজের নাক কেটে কি অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করবে ইরান
মার্কিন কর্মকর্তারা জেনেভার বৈঠক নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন। তবে হোয়াইট হাউসের অন্তত এক কর্মকর্তা বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন।
হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে সিএনএনকে বলেন, 'ইউরোপের নেতাদের সঙ্গে ইরানের বৈঠক হতে চলেছে। প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) আমাদের মিত্রদের এই কূটনীতিক উদ্যোগে সমর্থন জানান, যা ইরানকে চুক্তিতে সই করতে রাজি করাতে পারে।'
যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান যে বার্তা দিয়েছে
এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েল হামলা শুরুর পর থেকেই ওয়াশিংটনকে এক ও অভিন্ন বার্তা দিয়ে গেছে তেহরান। তাদের বক্তব্য, 'আগ্রাসনের মুখে দরকষাকষি সম্ভব নয়'। তারা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছে, ইসরায়েলের সামরিক অভিযান না থামা পর্যন্ত ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় বসতে আগ্রহী নয় তেহরান। সূত্ররা আরও জানান, এখনো ইসরায়েলকে হামলা থামাতে কোনো ধরনের চাপ দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প এ সপ্তাহে জানান, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে তিনি যে বার্তা দিয়েছেন তা হলো, '(হামলা) চালিয়ে যাও।'
সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এখনো ব্যবহার করেনি ইরান?

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের একটি বিধ্বস্ত ভবন। মধ্য ইসরায়েল, ১৫ জুনছবি: রয়টার্স

এখন পর্যন্ত ইরান চিরতরে ইউরেনিয়াম পরিশোধন বন্ধের শর্তে রাজি হয়নি বা রাজি হতে পারে, এমন ইঙ্গিত দেয়নি। তাদের দৃষ্টিতে, এই শর্ত গ্রহণযোগ্য নয়। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আলোচনার বিষয়ে কিছু চূড়ান্ত হয়নি বলে মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
ট্রাম্পের মতি-গতি বোঝা দায়
একদিন আগেও সবাই ভাবছিলেন, 'এই বুঝি ট্রাম্প হামলা শুরুর নির্দেশ দিলেন'। কিন্তু বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টদের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে দুই সপ্তাহের সময় 'কিনে নিলেন' ট্রাম্প। তার এই উদ্যোগ এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে—চলমান সংকটে সামরিক নয়, কূটনীতিক সমাধানেই তিনি বেশি আগ্রহী।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের দুই সপ্তাহের সময়সীমার বিষয়টি জানান মার্কিন প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট। তিনি বলেন, 'আমার মতে, প্রেসিডেন্ট সব সময়ই যে বিষয়টি স্পষ্ট করে এসেছেন, তা হলো- তিনি কূটনীতিকে (যুদ্ধের তুলনায়) বেশি প্রাধান্য দেন। তবে বিশ্বাস করুন, প্রয়োজন বোধে শক্তিপ্রয়োগে পিছপা হবেন না প্রেসিডেন্ট।'
'ইরান ও বিশ্বের বাকি সব দেশের এটা জানা উচিত যে, মার্কিন সামরিক বাহিনী সবচেয়ে শক্তিশালী ও বিধ্বংসী এবং আমাদের যে সক্ষমতা আছে, তা আর কারও নেই', যোগ করেন তিনি। এর আগে, একাধিক জরুরি বৈঠকে ট্রাম্প তার উপদেষ্টাদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন।
তিনি জানতে চান, ফোরদোতে অবস্থিত ইরানের ভূগর্ভস্থ পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করতে যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কার বাস্টার বোমা কতটুকু কার্যকর। এ ধরনের অভিযানে কতটুকু সময় লাগতে পারে, সেটাই জানতে চান ট্রাম্প। এসব আলোচনা সম্পর্কে জানেন, এমন সূত্ররা গণমাধ্যমগুলোকে এই তথ্য দিয়েছে।
ট্রাম্প এসব আলোচনায় উল্লেখ করেন, যদি সামরিক অভিযানে যেতেও হয়, তিনি চান তা দ্রুত শেষ হোক। কয়েক বছর ধরে হামলা চালিয়ে যেতে তিনি একেবারেই আগ্রহী নন। তবে ট্রাম্পের এক কালের শীর্ষ স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিভ ব্যানন মত দিয়েছেন, যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলেও খুব শিগগির এই সংঘাত বন্ধের সম্ভাবনা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানের বিকল্পগুলো খতিয়ে দেখছেন ট্রাম্প। তবে দীর্ঘসময় ধরে চলতে পারে এমন যুদ্ধে সংযুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।
এক কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্পের সামলে হামলার যেসব পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে, তার মধ্যে প্রায় সবগুলোতেই দেখা গেছে হামলা পরবর্তী সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি বেশ কিছুদিন ধরে চলতে থাকবে। এ ধরনের সব পরিকল্পনাকে 'সন্তোষজনক নয়' বলে রায় দিয়েছেন মার্কিন নেতা।
এই দুই সপ্তাহে ট্রাম্প যা করবেন
ট্রাম্পের দুই সপ্তাহ সময় নেওয়ার বিষয়টি সবাই ভালো চোখে দেখছেন না। ইতোমধ্যে আপত্তি জানিয়ে বসেছেন এক ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তিনি বলছেন, ট্রাম্পের উচিত হামলা করবেন, কি করবেন না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্তটি এখুনি জানিয়ে দেওয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, 'এতে কোনো কাজ হচ্ছে না।'


বিশ্লেষকদের মতে, এই দুই সপ্তাহে ট্রাম্প তার শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তথ্য জোগাড় করবেন। জরুরি বৈঠকে তিনি সিআইএর পরিচালক জন র‍্যাটক্লিফ ও জয়েন্ট চিফস চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইনের কাছে বিভিন্ন বিকল্প পরিকল্পনা চেয়েছেন। তবে কূটনীতিক কার্যক্রমের কেন্দ্রে থাকবেন উইটকফ, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিনিধি।
উইটকফ নিয়মিত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। গত কয়েকদিনের অস্থিরতার মধ্যেও সেই যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। উইটকফের দেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ইরানকে তাদের ভূখণ্ডে ইউরেনিয়াম পরিশোধন প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস আবারও জানায়, চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার জন্য এই শর্তপূরণ খুবই জরুরি।
দুই সপ্তাহ পর কী হতে পারে
সব মিলিয়ে এখন একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ইরান তাদের কঠোর অবস্থান থেকে সরে না আসলে দেশটি মার্কিন সেনাবাহিনীর পূর্ণ শক্তিমত্তার সম্মুখীন হবে। সে ক্ষেত্রে 'যুদ্ধ চাই না' বলে দাবি করলেও ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলকে সহায়তা দিতে যুদ্ধবিমান, বাঙ্কার বাস্টার বোমাসহ আরও যা যা প্রয়োজন, তা ইরানে পাঠাতে বাধ্য হবেন ট্রাম্প। বিশ্ব আরেক মর্মান্তিক ট্র্যাজেডির সাক্ষী হবে। পুড়বে ইরান। হতাহত হবেন লাখো মানুষ।


শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর তেহরানে খামেনির সমর্থনে এবং ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে ইরানিদের বিক্ষোভ

ইরানে মার্কিন হামলার প্রস্তুতি শেষ, অপেক্ষা ট্রাম্পের আদেশের

এখন বিশ্ব সম্প্রদায়ের একটাই প্রত্যাশা ও প্রার্থনা—এই দুই সপ্তাহে তেহরান-ওয়াশিংটন ঐক্যমত্যে পোঁছাবে, যা দুই পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং ইরান-ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ হবে। হয়তো এই সংঘাতের অবসান হলে গাজাবাসীও তাদের নারকীয় যন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পাবে। হয়তো মধ্যপ্রাচ্যজুড়েই বইবে শান্তির সুবাতাস। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর ক্রমাগত হামলার মধ্যেই এবার পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের সাবেক উপ–প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও লেবার পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেইর মাসরি।
আরবি ও উর্দু ভাষায় এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, 'ইরানের পর এবার আমরা পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের চিন্তা করছি।' পোস্টে মাসরি আরও লেখেন, 'পাকিস্তান ইরান থেকে দূরে নয়। এতটুকু বুঝলেই যথেষ্ট।'
অপরদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তিন দশকের বেশি সময় ধরে বারবার একটি কথা বলে আসছেন, ইরান শিগগিরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে ফেলবে। নেতানিয়াহু কখনো বলেছেন কয়েক বছর, কখনো বলেছেন কয়েক মাসের মধ্যে ইরান পরমাণু বোমা তৈরির সক্ষমতা অর্জন করে ফেলবে। কিন্তু কখনোই তার সেই কথার সত্যতা পাওয়া যায়নি।
জাতিসংঘসহ অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা—বিশেষ করে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রমাণ পায়নি। সিএনএন বলছে, ইসরায়েলেরও সুপরিকল্পিত পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি রয়েছে এবং অন্য দেশের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইসরায়েলের মাথাব্যথা থাকলেও নিজেদের ব্যাপারে বরাবরই মুখে কুলুপ এঁটে থাকে দেশটি।
ইসরায়েলের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি
ইসরায়েল কখনো তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির কথা স্বীকার করেনি, যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন- এটি মধ্যপ্রাচ্যের 'সবচেয়ে জানা গোপন বিষয়'। আন্তর্জাতিক কৌশলগত গবেষণা ইনস্টিটিউটের মতে, ইসরায়েল পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম, যারা তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা স্বীকারও করে না, অস্বীকারও করে না।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে, ইসরায়েল হলো নয়টি দেশের একটি, যাদের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যেমন: যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান এবং উত্তর কোরিয়া।
ইসরায়েল ১৯৭০ সালের পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটি) সই করেনি এবং মধ্যপ্রাচ্যে একটি গণবিধ্বংসী অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল গঠনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টারও বিরোধী। তবে তারা ১৯৬৩ সালের সীমিত পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধ চুক্তিতে সই ও অনুমোদন করেছে, যা সইকারী দেশগুলোকে বায়ুমণ্ডল বা মহাসাগরে পারমাণবিক বিস্ফোরণ না করার বাধ্যবাধকতা দেয়।
ইসরায়েলের কাছে কতদিন ধরে পারমাণবিক অস্ত্র আছে?
ইসরায়েল ১৯৪৮ সালে নিজেদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই পারমাণবিক অস্ত্র বিকাশের সম্ভাবনা অনুসন্ধান শুরু করে, পরে ১৯৫৮ সালে দক্ষিণাঞ্চলের শহর ডিমোনার কাছে একটি গোপন স্থানে কর্মসূচি শুরু করে।
ধারণা করা হয়, ১৯৬৬ বা ১৯৬৭ সালের দিকে ইসরায়েল প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে। ১৯৬৮ সালে সিআইএ জানায় যে, ইসরায়েল সফলভাবে পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন শুরু করেছে।
বি�

MIDDLE EAST বিভাগের অন্যান্য খবর

শিরোনাম রাতের ভোট বনাম চাপাইনবাবগঞ্জ দৃষ্টান্ত শিরোনাম নির্বাচনব্যবস্থার পুরো নিয়ন্ত্রণে ছিলো এনএসআই-ডিজিএফআই শিরোনাম ঝুলে গেছে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়া! শিরোনাম রাষ্ট্রতো আর মিষ্টির দোকান নয় শিরোনাম ৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালন থেকে সরে এলো সরকার শিরোনাম লালমনিরহাটে পরেশ চন্দ্র শীল ও ছেলে বিষ্ণুর অপরাধ কী?