ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি ক্ষেপনাস্ত্র হামলার মধ্যে আজ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেন, জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেবে ইরান। দেশটি দৃঢ় থাকবে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া শান্তির বিরুদ্ধেও। তিনি আরও বলেন, ইরান কারও কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।
বুধবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত দেওয়া ভাষণে খামেনি এ কথা বলেন। দেশটির সংবাদ সংস্থা তাসনিমের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা এ কথা জানিয়েছে। খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের কথাও উল্লেখ করে বলেন, যারা ইরান ও এর ইতিহাস জানে তারা জানে, ইরানিরা হুমকির ভাষার প্রতি ভালো সাড়া দেয় না। আর আমেরিকানদের জানা উচিত যে, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে অপ্রতিরোধ্য পরিণতি বয়ে আনবে, বলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।
ইরানের দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা: আইএইএ
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরানের দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। খবর আল-জাজিরার। আজ বুধবার এক এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে আইএইএ জানায়, ইরানি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র টিইএসএ কারাজ ও তেহরান রিসার্চ সেন্টারে হামলা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রই একসময় আইএইএর নজরদারির আওতায় ছিল।
এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করে, তারা ৫০ টির বেশি যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানে হামলা চালিয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রসহ একাধিক অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র। টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ব্যাপক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা নির্দেশনার ভিত্তিতে এই হামলা চালানো হয়।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা বরাবর অস্বীকার করে এসেছে। দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে ইরানের দিক থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
এখন পর্যন্ত ৪ শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান: নেতানিয়াহুর দপ্তর
ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে গত শুক্রবার থেকে সংঘাত চলছে। পাল্টাপাল্টি হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের দিকে ৪০০ টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তেহরান। এ ছাড়া ইসরায়েলে হামলার জন্য তেহরান কয়েক শ ড্রোন পাঠিয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর আজ বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছে। খবর সিএনএনের। নেতানিয়াহুর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ইরানি হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮০০ জনের বেশি।
ইরানের হামলার জেরে ৩ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে তাঁদের বাড়ি থেকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।
ইরানের ভেতরে ‘শত্রুপক্ষের’ড্রোন তৈরির কারখানা শনাক্ত: ইরানি পুলিশ
ইরানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রদেশে ‘শত্রুপক্ষের’ ড্রোন তৈরির কারখানা এবং ড্রোন বহনকারী যানবাহন শনাক্তের কথা নিশ্চিত করেছেন দেশটির পুলিশের মুখপাত্র সাঈদ মন্তাজেরোলমাহদি। পুলিশের এই মুখপাত্রের বরাতে খবরটি প্রকাশ করেছে ইরানের লেবার নিউজ এজেন্সি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরায়েলের ১৪টি ড্রোন ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে ইরানের পুলিশ। খবর আল জাজিরার।
ইসরায়েলের অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি ইরানের
তেহরান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ইরানের রাজধানীর কাছে ভূপাতিত করা হয়েছে। রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ইরানের ভারামিন শহরের গভর্নর হোসেইন আব্বাসি আজ বুধবার সকালে এই তথ্য জানিয়েছেন।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, গভর্নর হোসেইন আব্বাসি বলেছেন, দেশটির সেনাবাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসরায়েলের এই সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমানটি ভূপাতিত করে।
গত শুক্রবার ভোরে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়। এরপর থেকে এ নিয়ে ইসরায়েলের মোট পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইরান। এফ-৩৫ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান। এটি রাডারে সহজে ধরা পড়ে না। এর একাধিক সংস্করণ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ এটি ব্যবহার করে।
তেহরানের কাছে মোসাদের ড্রোন কারখানা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান: প্রেস টিভি
ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী তেহরানের উপকণ্ঠে একটি তিনতলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ পরিচালিত একটি গোপন ড্রোন ও বিস্ফোরক তৈরির কারখানার খোঁজ পেয়েছে।
ইরানের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভির এক খবরে এমনটা দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, গত রোববার ইরানি পুলিশ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সেখানে ড্রোনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, যেমন পাখা ও কাঠামোর অংশ আর ধাতব সরঞ্জাম রয়েছে। এসব যন্ত্রাংশ ড্রোন তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, ওই বাড়ির ভেতরেই ড্রোন তৈরি হচ্ছিল। সেখানে যন্ত্রাংশ তৈরির সরঞ্জামও জব্দ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ড্রোন কারখানার সন্ধান পাওয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের আগের একটি স্বীকারোক্তি মিলে যায়।
পশ্চিমা গণমাধ্যম অ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছিল, মোসাদ কর্মকর্তারা আট মাস ধরে ইরানে ড্রোন পাচার করছিলেন, যাতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলোয় হামলা চালানো যায়। যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান সংবাদপত্রের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটির আশপাশে মোসাদ এজেন্টরা অবস্থান করছিলেন, যেন সমন্বিতভাবে নাশকতা ও ড্রোন হামলা চালানো যায়।
এই অভিযানে পাওয়া এসব প্রমাণ ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইসরায়েল ও গাজার চলমান যুদ্ধের মধ্যেই মোসাদ ইরানের মাটিতে সক্রিয়ভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল।
একই দিন গত রোববার তেহরানের রাস্তায় নাটকীয় কায়দায় একটি ট্রাক ধাওয়া করার দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়ে। একজন ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা একটি ট্রাকের পেছনে ছুটে যাচ্ছিলেন। সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই ট্রাকে উন্নত মানের ইসরায়েলি ড্রোন বহন করা হচ্ছিল। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পরপর দুটি গুলি চালিয়ে ওই ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা ট্রাকটি থামান। ওই গাড়িতে অত্যাধুনিক ড্রোনের মজুত পাওয়া যায়।
এর আগে ওই দিনেই ইরানি গোয়েন্দারা ওই ড্রোন তৈরির গোপন কারখানা ধ্বংস করে। ধারণা করা হচ্ছে, ড্রোন তৈরি ছাড়াও গুপ্তচরবৃত্তি বা নাশকতার উদ্দেশ্যে ওই বাড়িকে আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
তবে ইরানি কর্তৃপক্ষ এখনো সব তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে জোর দিয়ে বলেছে, বিদেশি হুমকির বিরুদ্ধে তারা কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী এখন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবস্থায় রয়েছে। তারা ইরানের মাটিতে থাকা সন্দেহভাজন ইহুদিবাদী নেটওয়ার্কগুলো ভাঙতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
গত কয়েক সপ্তাহে এ ধরনের অনেক সন্দেহভাজন এজেন্টকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। বিদেশি গোয়েন্দা তৎপরতা মোকাবিলায় বড় ধরনের অভিযানের অংশ হিসেবে এই গ্রেপ্তার চলছে।
ইরানের কর্মকর্তারা অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেছেন, ইসরায়েল ও তার মিত্রদের হুমকির বিরুদ্ধে ইরান সর্বদা সতর্ক থাকবে। গত কয়েক দশকে এই চক্র ইরানের ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান
যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ইরানের ওপর হামলায় অংশ নেয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে পাল্টা হামলা চালাতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে ইরান। মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনা করে এমনটাই জানাচ্ছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
মার্কিন কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ইরান এরই মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুত রেখেছে, যা প্রয়োজনে বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে মার্কিন সামরিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানতে ব্যবহৃত হবে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিষয়টি এখন শুধু কূটনৈতিক নয়, পূর্ণাঙ্গ সামরিক উত্তেজনার হুমকি। মধ্যপ্রাচ্যে ৪০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে ও তাদের বেশিরভাগই সৌদি আরব, জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন।
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন প্রশাসন আশঙ্কা করছে, তারা যদি ইসরায়েলের সাথে মিলে ইরানের পরমাণু স্থাপনা ‘ফোরদোতে’ হামলা চালায়, তবে ইরানপন্থি হুথি গোষ্ঠী লোহিত সাগরে আবারও বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা শুরু করবে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে কেউ কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারবে না। ইরানি জনগণের ওপর কোনো ইচ্ছা জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
তিনি ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপে জানান, যদি যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে, তবে তার দায়ভার বহন করতে হবে ইসরায়েল ও তার প্রধান মিত্রদের।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা মনে করছেন, ইসরায়েল এককভাবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করতে পারবে না। ফোরদো পরমাণু স্থাপনার নিচে বিস্তৃত টানেলে লুকানো ইউরেনিয়াম মজুত থাকায় তা ধ্বংস করতে বি-২ স্টেলথ বোম্বারের মতো অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের সহায়তা দরকার হবে। এই বিমান থেকে নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রই একমাত্র অস্ত্র, যা পাহাড় ভেদ করে আঘাত হানতে পারে।
কিন্তু এমন হামলা চালানো মানেই- মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের অগ্নিশিখা ছড়িয়ে পড়া। ইরান ঘোষণা দিয়েছে, ইসরায়েলের হয়ে যুক্তরাষ্ট্র যদি হামলা শুরু করে, তাহলে ইরাকে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলোই হবে প্রথম টার্গেট। পাশাপাশি যারা ইসরায়েলকে সহায়তা করবে, সেই সব আরব দেশের ঘাঁটিগুলোতেও হামলা চালানো হবে।
গোটা পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, মার্কিন সামরিক বাহিনী আশঙ্কা করছে, ইরান যদি হরমুজ প্রণালীতে নৌ-মাইন স্থাপন করে, তাহলে পারস্য উপসাগরে থাকা মার্কিন রণতরীগুলো কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে।
ইসরায়েলি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ইরানের আত্মরক্ষার অধিকার সম্পূর্ণ বৈধ: এরদোয়ান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান আজ বুধবার মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি ইরানের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘ইসরায়েলের দাদাগিরি ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষায় ইরানের পদক্ষেপ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, বৈধ ও আইনসংগত।’
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টির পার্লামেন্টারি গ্রুপ বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। এরদোয়ানের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন ইসরায়েল ক্রমাগত ইরান ও তাদের মিত্রদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
সংঘাতের ভয়াবহতা তুলে ধরে এরদোয়ান বলেন, ‘নেতানিয়াহু বহু আগেই গণহত্যার অপরাধে স্বয়ং হিটলারকেও ছাড়িয়ে গেছেন। আমরা আশা করি, তাদের পরিণতি এক হবে না।’ তিনি বলেন, ‘গাজা, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন ও আমাদের প্রতিবেশী ইরানের ওপর যে অমানবিক আগ্রাসন চলছে, তা থামাতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।’
ইসরায়েলের হামলায় সাধারণ মানুষের প্রাণহানির বিষয়টি তুলে ধরে এরদোয়ান বলেন, ‘নিহত শিশু, শিশুদের রক্ত শুধু ইসরায়েলের দম্ভে সমর্থন দেওয়া লোকজনের হাত-মুখেই লেগে নেই, যারা নীরব থেকেছে, তাদের হাতেও সেই রক্ত লেগে আছে।’
আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এরদোয়ান বলেন, ‘ইসরায়েলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দিকে আমরা সতর্কভাবে নজর রাখছি। এসব হামলার তুরস্কে সম্ভাব্য প্রভাব বিবেচনায় আমাদের সব সংস্থা সতর্ক অবস্থায় আছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণ নিশ্চিন্ত থাকতে পারে। দেশের স্বার্থ, শান্তি, ঐক্য ও নিরাপত্তা রক্ষায় সরকার দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এরদোয়ান আরও বলেন, ‘সম্ভাব্য সব খারাপ পরিস্থিতি ও সংকটের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি এবং নিচ্ছি।’ তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে বলেন, ‘মানবতার সামনে প্রকাশ্যে যে আগ্রাসন চালানো হচ্ছে, তার বিপরীতে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও অনেক রাষ্ট্র নিশ্চুপ। কেউ কেউ তো এই দাদাগিরি প্রকাশ্যে সমর্থন করছে।’
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইসরায়েলের এই আগ্রাসন বন্ধ করা বিশ্বের এবং মানবতার জন্য জরুরি। আমাদের প্রতিবেশী ইরানসহ এই অঞ্চলের সব দেশের উচিত এসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া।’ তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে আমাদের লড়াই চলবে। আমরা এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আরও জোরালোভাবে কাজ করব। আমরা কূটনৈতিক যোগাযোগ ও ফোন কূটনীতি বন্ধ করব না। সবার জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে—এমন পরিস্থিতি প্রতিরোধে যা করা দরকার, তা-ই করব।’