ঢাকা, ১৪ মার্চ, ২০২৫
The News Diplomats
রিফাত পারভীন এ্যানি, ঢাকা :
Publish : 11:20 AM, 12 March 2025.
Digital Solutions Ltd

বাংলাদেশে যৌন হয়রানি, আইন ও বিচারের হার

Publish : 11:20 AM, 12 March 2025.
বাংলাদেশে যৌন হয়রানি, আইন ও বিচারের হার

রিফাত পারভীন এ্যানি, ঢাকা :

বাংলাদেশে যৌন হয়রানির অভিযোগের ২০ থেকে ২৫ শতাংশের বিচার হয়৷ অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী নারী বিচার চাইতেই পারেন না৷ বিচার প্রার্থনা এবং বিচার প্রাপ্তির হার এত কম কেন?
‘দেশে যেসব সমস্যার জন্য আইন রয়েছে সেগুলোরই ঠিকঠাক বিচার হয় না, সেখানে আইনই তো নেই, যৌন হয়রানির বিচার করবে কে?'' হতাশা আর ক্ষোভ দুটোই কণ্ঠে নিয়ে কথাগুলো ডয়চে ভেলেকে বলছিলেন কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার রোকসানা (ছদ্মনাম)।
তার সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার আলাপে যে বিষয় খুব পরিষ্কারভাবে উঠে আসে তা হলো, রোকসানার মতো কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার নারীদের অনেকেই দেশে এমন একটি গুরুতর বিষয়ে আইন না থাকায় এবং সমাজের নানা জনের বাজে কথার ভয়ে চুপ থাকেন।
তখন একটি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন রোকসানা। কর্মক্ষেত্রে নিজের বিভাগের একজন প্রধান কর্মকর্তার কাছে মাসের পর মাস ইঙ্গিতপূর্ন মন্তব্য শুনতে হয়েছে তাকে। সেই বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘সেই কর্মকর্তা আমাকে সবার সামনে ‘ডার্লিং' ডাকতো। আমি বিবাহিত৷ তারও স্ত্রী-সন্তান আছে৷ তা সত্ত্বেও আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথাও বলতো বারবার। আবার প্রায়ই দেখতাম কাজ করার সময় আমার পিছনে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকতো। এতে খুব বিব্রত হতাম। তাকিয়ে থাকলে মনে হতো হয়তো শরীরের কাপড় ঠিক নেই। মাঝে মাঝে ভাবতাম- তবে কি আমিই তাকে এমন কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছি? কেন বারবার তিনি একই আচরণ করছেন, একই ধরনের কথা বলছেন?''
রোকসানা আরো বলেন, ‘‘অফিসে স্ক্যানরুমে কাজ করার সময় একদিন হঠাৎ পিছন থেকে চেয়ার ঘুরিয়ে আমাকে তিনি একেবারে কাছে টেনে নেন। তাই সেই রুম থেকে বের হয়েই আমি ও আরো ৫ জন নারী কর্মী (তারাও একই ধরনের আচরণের শিকার) সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিলাম। অভিযোগের কয়েক মাসের মধ্যেই সেই ব্যক্তির চাকরি চলে যায়।”
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির ঘটনা সামনে আসে প্রায়ই। স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক, ছেলে শিক্ষার্থী বা সেখানেই কর্মরত পুরুষ কর্মীদের যৌন হয়রানির শিকার হন নারী শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী তারই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক পুরুষ কর্মচারীর কাছে যৌন হেনস্তার শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারি বাইন্ডার মোস্তফা আসিফ অর্ণব ওই নারী শিক্ষার্থীর পোশাক নিয়ে ‘অশ্লীল' মন্তব্য করেন, ইঙ্গিতপূর্ণ প্রশ্ন করেন। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিমের তত্ত্বাবধানে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়।কিছু লোক থানায় গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির পাশে থাকার বার্তা দেয়৷ সেই ব্যক্তি পরে জামিনে মুক্ত হলে তাকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেয় এবং সেই মুহূর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধজ্যমে ছড়িয়ে পরলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর বর্ষের শিক্ষার্থী নোরা। তিনি বলেন, "যে প্রতিষ্ঠানে এতগুলো বছর পড়াশুনা করলামম সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাফেরা করতে এখন ভয় লাগে। ক্যাম্পাসের মধ্যে ১০/১৫ জন ছেলের জটলা দেখলে পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে ভয় লাগে। ক্যাম্পাসের মধ্যে কোনো নিরিবিলি রাস্তায় হেঁটে এমন কি রিক্সায় যেতেও ইদানীং ভয় লাগছে।”
দেশের বিভিন্ন স্থানে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে এই শিক্ষার্থী বলেন, "কারো হিংস্র মানসিকতার পরিবর্তন অন্য কেউ করতে পারে না। তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো করতেই হবে। আইনের প্রয়োগের অভাবে নিরাপত্তা যেহেতু পাচ্ছি না, খারাপের বিরুদ্ধে ভয় তৈরি করতে আন্দোলন জরুরি হয়ে পড়েছে।”
পরিসংখ্যান কী বলছে-
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ২০২৫ সালে শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই উত্ত্যক্তকারীদের মাধ্যমে ১১ জন নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। একই প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ১৬৫টি, ২০২৩ সালে ১৪২টি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এবং ‘অ্যাওয়ারনেস বাংলাদেশ' পরিচালিত ২০২০ সালের একটি জরিপ অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে ৫৮% নারী কর্মী শারীরিক বা মানসিকভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এছাড়া প্রায় ৪৩% নারীর কর্মস্থলে যৌন হয়রানির ঘটনাও ঘটেছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, নারী উন্নয়ন ফোরাম এবং অ্যাওয়ারনেস বাংলাদেশ-এর করা জরিপ বলছে, প্রায় ৩৫% নারী কর্মী তাদের সহকর্মী বা সুপারভাইজারের কাছ থেকে অশ্লীল মন্তব্য এবং আপত্তিকর আচরণের শিকার হয়েছেন।
বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি এবং অ্যাওয়ারনেস বাংলাদেশের এক জরিপে প্রায় ৪০% নারী কর্মী জানিয়েছেন, তাদের কর্মস্থলে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ জানালে কর্তৃপক্ষ সঠিক পদক্ষেপ নেয় না বা বিষয়টি উপেক্ষা করে।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির তথ্য অনুযায়ী, কর্মস্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির মামলার মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে বিচার হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগকারীরা হয়রানির শিকার হন বা তাদের মামলা দীর্ঘসূত্রতার কারণে প্রভাবহীন হয়ে পড়ে।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ ও জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ-এর এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের পর মাত্র ১৮ শতাংশ ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ায়, এবং এর মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি-
বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)-এর ২০২১ সালে করা এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) অনুমোদিত ১৫৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৭টি, অর্থাৎ ৬১ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় অভিযোগ কমিটি গঠন করেছে। এর মধ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৪০টি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৫৭টি। ৬২টি বিশ্ববিদ্যালয়, অর্থাৎ, ৩৯ শতাংশ কোনো অভিযোগ কমিটি গঠন করেনি। এর আগে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় অভিযোগ কমিটি গঠন করেছিল।তথ্য দেওয়া ৪৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৮ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো অভিযোগ বাক্স নেই।গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২৮ বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ কমিটি মোট ৯৯টি অভিযোগের নিষ্পত্তি করেছে।
কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী যৌন হয়রানির আইন-
বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সরাসরি কোনো আইন এখনো নেই। তবে একটি নীতিমালা রয়েছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের হাইকোর্ট একটি রায়ে যৌন হয়রানির সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১১ দফা নির্দেশনা দেয়।
বাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী, কর্মস্থলে যৌন হয়রানি একটি অপরাধ। ২০১৮ সালে আইনটি সংশোধন করে আরো কঠোর করা হয়৷ সেখানে বলা হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য এবং নির্যাতনের শিকার কর্মীরা সরাসরি শ্রম আদালতে অভিযোগ জানাতে পারেন।
কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন ১৯০ অনুমোদন করেছে৷ তবে বাংলাদেশ সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অনুস্বাক্ষর করেনি। এই কনভেনশনের আওতায় কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আরো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী যৌন হয়রানির আইন নিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব (আইন) আসফিয়া সিরাত ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এই আইনের খসড়া তৈরি করে কয়েকদিন আগেই আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। আমরা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের কাছে মতামত চেয়েছি, কিছু ইতিমধ্যেই পেয়েছি। বাকি মতামত পেলে আবার খসড়াটি পর্যালোচনা করে পূর্ণাঙ্গ আইন আকারে পাস হবে।তবে কবে নাগাদ আইনটি পাস হবে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।”
দায়বদ্ধতার চর্চা না থাকাই মূল কারণ: নাহার-
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল/মে মাসে ‘যৌন হয়রানি ও সুরক্ষা আইন ২০২৪'- এই নামে খসড়া তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। তবে বর্তমানে ‘কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ এবং সুরক্ষা আইন, ২০২৫'-এই পরিবর্তিত নামে খসড়াটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
আইনটির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নারী সংগঠন নারী পক্ষের সদস্য কামরুন নাহার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "হাইকোর্ট ২০০৯ সালে নীতিমালা দিয়ে সরকারকে দ্রুত তা আইনে পরিণত করতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে যে নির্দেশনা দেওয়া হলেও তারা সেটির ব্যত্যয় ঘটিয়েছে এবং না মানার জন্য তাদের কেউ সেভাবে দায়বদ্ধও করছে না। দায়বদ্ধতার চর্চা না থাকাই অপরাধের মূল কারণ। আর এতে করে ভুক্তভোগীও চুপ করে থাকতে বাধ্য হন।”
"প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই স্বাধীন একটি মেকানিজম থাকা উচিত। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠানের চেষ্টার পর কিছু প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নিলেও যৌন হয়রানির সংজ্ঞাটি নির্দিষ্ট নয়। ফলে শাস্তি কেমন হবে সে বিষয়টিও পরিষ্কার নয়। তাই যৌন হয়রানিমূলক নির্দিষ্ট আইনটি দ্রুতই পাস ও বাস্তবায়ন দরকার।”

কী আছে খসড়ায়-
কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আদালতের নীতিমালাকে ভিত্তি ধরে মূলত আইনের খসড়াটি করা হয়েছে বলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। খসড়া আইনে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ গ্রহণ এবং তদন্ত পরিচালনা ও সুপারিশের জন্য প্রতিটি কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ তদন্ত প্রক্রিয়া, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, কোন কোন কাজ যৌন হয়রানি হিসেবে গণ্য হবে এবং মিথ্যা অভিযোগ ও সাক্ষ্য দেওয়ার শাস্তিসহ বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে খসড়া আইনে।
যেসব কাজ যৌন হয়রানি হিসেবে গণ্য হবে, তেমন কাজের একটি তালিকায় শারীরিক সংস্পর্শ এবং যৌনতার জন্য অগ্রসর হওয়া বা এ ধরনের প্রচেষ্টা; যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রশাসনিক, কর্তৃত্বমূলক বা পেশাদারি ক্ষমতার অপব্যবহার; যৌন অনুগ্রহের দাবি, কিংবা অনুরোধ জানানো; ভয়, প্রতারণা বা মিথ্যা আশ্বাসের মাধ্যমে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার প্রচেষ্টা; যৌনতা বিষয়ক মন্তব্য, বক্তব্য, তামাশা বা অন্যান্য মৌখিক ক্রিয়াকলাপ, যাতে যৌনতার প্রভাব বিদ্যমান; পর্নোগ্রাফি দেখানো বা যৌনতাপূর্ণ বা যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কোনো বস্তু প্রদর্শন; কোনো কামুক দৃষ্টি, শিস দেওয়া বা যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কোনো অঙ্গভঙ্গি; ব্ল্যাকমেইলিং বা মর্যাদাহানির উদ্দেশ্যে কারো স্থির বা ভিডিও চিত্র ধারণ ও সংরক্ষণ, প্রদর্শন, বিতরণ, বিপণন ও প্রচার বা প্রকাশ করা; যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কোনো বস্তু, ছবি, শব্দ, ইমেইল, টেক্সট বার্তা/খুদে বার্তা বা লিখিত নোট ব্যবহার; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে যৌন সম্পর্কযুক্ত আপত্তিকর কোনো তথ্য বা বিষয় প্রকাশ করা বা যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ আপত্তিকর বার্তা প্রেরণ করা বা কোনো অশালীন মন্তব্য করা; কারো জেন্ডার পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করে কটূক্তি করা বা অপমানজনক মন্তব্য করা; একজন ব্যক্তির জেন্ডার পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করে পিতৃতান্ত্রিক ধারণাপ্রসূত অবমাননাকর মন্তব্য করা এবং অন্য যে কোনো আচরণ, যা যৌন হয়রানির সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে বলা হয়।
দ্রুতই খসড়া হয়ে থাকা আইনটি পাস করা উচিত: তানিয়া
চলমান আন্দোলনে কি সাফল্য আসবে?-
নারীদের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণ নিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ আন্দোলন করছেন বেশ কিছুদিন ধরে। আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী শুভ্রা (ছদ্মনাম) বলেন, ‘‘দেশে আইনের ব্যবহার কঠোরভাবে হচ্ছে না বলেই এমন ঘটেনা একের পর এক ঘটে যাচ্ছে। সরকারকে বোঝাতে হবে আমরা এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিস-এর অধ্যাপক তানিয়া হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, "শিশু ও নারীর যৌন হয়রানি মূলত শুরু হয় পরিবার থেকেই, এরপরে আসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র ও রাস্তাঘাট। ফলে সব সময়ই নারীরা একটি ‘ফিয়ার অব ভায়োলেন্স'-এ ভোগে। সমাজের নারীর প্রতি বিদ্রুপাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ভুক্তভোগী নারী যৌন হয়রানির শিকার হলেও কথা বলতে চায় না। আর কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি সংক্রান্ত আইন এখনো নেই আমাদের দেশে। তাই এমন ঘটনায় বিচারের উদাহরণ অনেক কম তৈরি হয়েছে।”
"দেশের আইন যখন অব্যবহৃত বা প্রয়োগের অভাব হয়, তখনই এমন ঘটনা ঘটে। আর এ ধরনের ঘটনার শেষ তো হচ্ছে না। ফলস্বরূপই এই আন্দোলন আমরা দেখতে পাচ্ছি। এমন প্রেক্ষাপটে দ্রুতই খসড়া হয়ে থাকা আইনটি পাস করা উচিত। বিচার করে অপরাধীর মনে ভয় তৈরি করা জরুরি, তা না হলে আন্দোলনের ফলাফল কিছুই আসবে না।”
ডি ডব্লিউ থেকে সংগৃহিত

BANGLADESH বিভাগের অন্যান্য খবর

The News Diplomats
The Latest Breaking News

Editor in Chief
Dulal Ahmed Chowdhury

News
Email: news@newsdiplomats.com

Advertisement
Email: ads@newsdiplomats.com

© The_News_Diplomats || Published from Canada.

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম What new will the new party have to offer? শিরোনাম Political government also should gain trust শিরোনাম Gaza: Return to war must be avoided at all costs, insists UN chief শিরোনাম Elon Musk vows to root out the highest-paid corrupt D.C. bureaucrats as he stuns America alongside Trump শিরোনাম খুলছে মালয়েশিয়ার বন্ধ শ্রমবাজার শিরোনাম যৌথ ঘোষণায় আনোয়ার ইব্রাহীম : মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ পাবে বাদ পড়া ১৮ হাজার শ্রমিক