মরক্কোয় রাষ্ট্রদূত থাকাকালে একটি অনুষ্ঠানে হারুন আল রশিদ - ফাইল ছবি
সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ, প্রধান উপদেষ্টার কড়া সমালোচনা এবং মরক্কো থেকে দেশে না ফিরে কানাডায় চলে যাওয়া রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশিদ সোমবার রাতে ফেসবুকে ‘অপরাধের চূড়ান্ত ও অপরাধীর পতন’ শিরোণামে নতুন এক বার্তায় বলেছেন,
মানবজাতিতে যত ইতিবাচক কাজ আছে তা কোনও না কোনও অবয়বে অব্যাহত থাকে এবং রয়েছে। কিন্তু অপরাধের ক্ষেত্রে তা ঘটে না। কোনও অপরাধ ক্রমাগত চলে না। কোনওটা এক হাজার বছর চলে। কোনওটা এক মিনিট চলে। সর্বজঙ্গি ফরহাদ মজহার, পিনাকী, ইলিয়াস, তাজ হাশমি, মাহমুদুর রহমান, জাহেদুর রহমান, গোলাম মুর্তোজা এবং বুঝে বা না বুঝে তাদের সহযোগী মাহফুজ আনাম, মতিউর রহমান, বদরুদ্দিন উমর, বিভিন্ন বাম দল, সিপিবি ইত্যাদি বাংলাদেশের সাথে যে অপরাধ করেছে তা আর বাড়ার সুযোগ নাই।
পিনাকীর চোখমুখ দেখেন। ফরহাদের অবস্থা দেখেন। দুই জন সন্ত্রাসী আমার কাছে খুবই আকর্ষণীয়। এক: পিনাকী। দুই: ফরহাদ। এরা যে শুধুই অপরাধী, মেধাবী ও সৃজনশীল অপরাধী, তা এদের পরিণত বয়সের রাজনৈতিক বিবর্তন দেখলে আর কোনও সন্দেহ করার অবকাশ থাকে না। অবশ্য পিনাকীর কাছে সব কিছুর ব্যাখ্যা আছে। ফরহাদের কাছেও হয়তো আছে। তবে তার ব্যাখ্যা আমি দেখিনি। আপনারা কী পিনাকী ও ফরহাদের চোখ দেখেছেন? আমি বছরের পর বছর এই দুই জোড়া চোখ পর্যবেক্ষণ করে আসছি। সামান্য ট্যারা এই চোখগুলির হিমশীতল নিষ্ঠুরতা যদি আপনি অবলোকন না করেন তা হলে আপনি এদের বুঝতে পারবেন না। এদের চোখজোড়া শায়খ আবদুর রহমানের চোখের মতো শীতল।
পিনাকী ও ফরহাদের মত অপরাধী কোনও জাতিতে কয়েকশো বছরে একজনের বেশি জন্মগ্রহণ করে না। ব্যতিক্রম হলাম আমরা। আমাদের জাতিতে এই পর্যায়ের অনেকগুলো অপরাধী একসাথে জড় হল। যা হোক। এই সব অপরাধী ও তাদের সহযোগিরা কে কোন পর্যায়ে গিয়ে তাদের অপরাধের কাফফারা দেয় তা দেখার বিষয়। আমার এই পোস্ট দেখে কেউ ভুল বুঝবেন না। যারা তাদের নেতাদের খুশি করার জন্য পিনাকীকে খুন করার কথা বলেন, তাদের প্রতি আমি নিন্দা জানাই। এতে পিনাকী ডাবল উস্কানি খায়। পিনাকীর মতে সর্বগুণে গুণান্বিত অপরাধীর সাথে আপনি পারবেন? সে বক্তৃতা দিতে জানে, মিছিল করতে জানে, ধমক দিতে জানে, গান গাইতে জানে, বাজনা বাজাতে জানে। প্রবাসিরা ইলিশ মাছ খাওয়ার জন্য কত ব্যাকুল থাকে এই নিয়ে অভিনয় করা পিনাকীর ভিডিওটা কি কেউ দেখেছিলেন? অবশ্য ওই অভিনয়টা ভাল হয়নি। যা হোক। বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করার সময় প্রবাসী অনেক রাজনৈতিক কর্মী বিভিন্ন সময়ে আমার কাছে এসে এই ধরনের খুন করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।
এক বার এক জনতো গোঁ ধরেছেন, তিনি খুনী ডালিমকে খুন করেই ছাড়বেন। অথচ মনের ভেতর শুধু একটুখানি লাইমলাইটে আসার চেষ্টা। আমার কথা পরিষ্কার। কোনও মানুষের অধিকার নাই কোনও মানুষের গায়ে হাত তোলার। একবিংশ শতাব্দীতে এটা বিশ্বের কোনও জায়গাতেই বৈধ নয়। বাংলাদেশেও নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও নয়। আবার প্রসঙ্গে আসি। এসব অপরাধী ও তাদের সহযোগিদের মধ্যে যাদের আইন খুঁজে পাবে না, তাদের বিবেক কিন্তু খুঁজে পাবে। অপেক্ষা করুন। দেখুন। আরেকটা জিনিস মনে রাখুন। অপরাধীর সামনের মন যদিও মনে করে সে ভালো কাজ করছে তার ভেতরের মন কিন্তু ভুগতে থাকে যে সে অপরাধ করছে। সেটাও কিন্তু কম শাস্তি নয়।
আলাদা আলাদা পোস্টে তিনি মানুষের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখেন :
প্রশ্ন-১। নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বেশির ভাগ মানুষ, যারা ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন করেছেন, তারা পুরস্কারের পুরোটা বা অংশবিশেষ দাতব্যে দান করেছেন। ইউনুস তার পুরস্কারের টাকা কী কাজে খরচ করেছেন? প্রশ্নটা করতাম না। করার কারণ আছে। যা ধীরে ধীরে জানাবো। ইউনুসের অনুসারিরা গালি না দিয়ে ভদ্রভাবে তথ্য সরবারহ করবেন বলে আশা রাখি।
প্রশ্ন-২। এই প্রশ্ন বিবেকের কাছে করার দরকার নাই। কারণ বিষয়টার ভয়াবহতা বুঝলেই আপনার দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবার কারণ আছে। বর্তমান ডাকাততন্ত্রের মোহাবিষ্ট নাগরিকগণ, যারা পুরোপুরি জঙ্গি হয়ে যাননি, যাদের কাছে নিত্য দিনের সমস্যাই প্রধান, তাদেরকে কতগুলো জিনিসে আহ্বান জানানো হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। তার একটি হল এই। সর্বজঙ্গি পিনাকী, মাহমুদুর রহমান, ফরহাদ মজহার, মামুনুল হক, শাহাদুজ্জামান (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতি সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক--এই গর্দভের মগজ নিয়ে সময় পেলে বিশ্লেষণ করব--এই জঙ্গি চল্লিশ পঞ্চাশ বছর নিজে কত জঙ্গি তৈরি করেছে তা ভাবলে যে কোনও স্বাভাবিক মানুষের পিলে চমকানোর কথা) আপনাদের কিশোর সন্তানদের সামরিক শিক্ষার পক্ষে বার বার আহ্বান জানাচ্ছে। এক জন শান্তিপ্রিয় নাগরিক হিসাবে আপনি তা কোন চোখে দেখেন, কোন মনে গ্রহণ করেন? যদিও ডাকাততন্ত্রের সক্ষমতা নাই সকল শিশুকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার, তবে ডাকাততন্ত্রের জঙ্গিদের সক্ষমতা আছে সকল শিশুকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেয়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনার সন্তানের শিক্ষার কথা বলে, কারিগরী শিক্ষার কথা বলে, চাকুরি প্রদান করে, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে, নিদেনপক্ষে সেই লক্ষ্যে অবিরাম কাজ করে আপনাদের সকল শান্তি নষ্ট করেছে। এখন উর্ধ্বতন জঙ্গিরা আপনার সন্তানের সামরিক প্রশিক্ষণের যে আহ্বান জানাচ্ছে তাতে আপনাদের কেমন শান্তি হচ্ছে? উত্তেজনা হতেই পারে। তবে ডাকাতদের কাছ থেকে যত এ ধরনের জঙ্গি ধারণা বের হবে তত আপনার অবচেতন মন আপনার মগজে ত্রাসের সঞ্চার করবে। অপেক্ষা করুন। দেখুন।
প্রশ্ন-৩। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পূর্বে করা জঙ্গি জাহেদুর রহমানের যে কোনও একটা ভিডিও দেখুন। আমরাতো সবাই জানি ও মানি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আমাদের কোনও বাক স্বাধীনতা দেয়নি, তাই না? তা হলে জঙ্গি জাহেদ ঢাকা শহরে বসে একেবারে নিরাপদে কী করে এই ধরনের ভিডিও বানাল এবং প্রচার করল? এক জন স্বাভাবিক মানুষ প্রতিদিন কত গ্যালন পান্নস সাপের বিষ গিললে জঙ্গি জাহেদের মতো এমন বিষাক্ত কথা বলতে পারবে? জঙ্গি জাহেদের মতো বিষাক্ত কথা কত লোক বলেছিল--৫ আগস্টের আগে--বছরের পর বছর ধরে--বাংলাদেশে বসে, নিরপাদে থেকে? বিশ্ববিখ্যাত এবং বিল ক্লিনটন এবং হিলারি ক্লিনটনের বন্ধু ইউনুসের যুগে কেউ কি একেবারে নির্বিষ এবং বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনা করেও একটা ভিডিও প্রচার করে বাংলাদেশে নিরাপদে ঘরে থাকতে পারবে? চোখ বন্ধ করে এক বার ভাবুনতো।
NEWSDIPLOMATS.COM
The Latest Breaking News
Dulal Ahmed Chowdhury
Editor in Chief
Email: dulalca73@gmail.com