মরক্কোয় রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর হারুন আল রশিদকে বিদায় জানাচ্ছেন অটোয়ায় বাংলাদেশের ত
সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ ও সামাজিক মাধ্যমে অন্তর্বর্ত্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কড়া সমালোচনা করে মরক্কো থেকে কানাডায় চলে যাওয়া রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশিদ ফেসবুকে নতুন এক বার্তায় বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও একটা দেশের অন্ধকার সময়ে তার জন্য কাজ করার সুযোগ তৈরি হল, এটা কম কী? কয়েক জন সন্ত্রাসী সারা জাতিকে অসহায় করে রেখেছে--এই ব্যাপারে কথা বলার সুযোগ তৈরি হল--এই আর কি। যে কথা চাকরি থেকে অবসরে গিয়ে বলতাম তা শোনার জন্য মূর্খদের আর ত্বর সইছিল না--আমার কাছে এমনই মনে হচ্ছে। নিম্নে তার পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলো-
ইউনুস আর তার পাণ্ডারা আমাকে হাতঠ্যাং বেঁধে একটিভিজমে নামিয়ে দিল। চব্বিশ বছরের চাকরির জীবনে আমার সাথে কোনও দলের কোনও সম্পর্ক ছিল না। এক সন্ত্রাসী অপপ্রচারকারি রেণুর আবির্ভাব উপন্যাস লেখা নিয়ে কিছু কথা জিজ্ঞেস করেছে তার ফেসবুকে। জঙ্গিদেরকে কোন গল্প কোন প্রেরণা থেকে লেখা হয় এটা ব্যাখ্যা করে কী লাভ? তাদেরতো তা বোঝার বোধই গড়ে ওঠেনি। আমি কসম করে বলতে পারি ওই সন্ত্রাসী ফেসবুকে ওই উপন্যাস ছড়িয়ে দেয়ার আগে আওয়ামি লিগের কোনও লোক এটার নামই জানত না, শুনেওনি কখনও। আমি লেখক। এত ইতর লেখক না যে একটা বই লিখে কোনও রাজনৈতিক সরকারের আনুকূল্য চাইব। সরকারি কর্মচারিরা তাদের ক্যারিয়ারে যা যা ঘটলে নিজেকে নির্যাতিত মনে করে আওয়ামি লিগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় আমার চাকরিতে তার সব কিছুই ঘটেছে। তার মানে এটাও নয় যে আমি আওয়ামি লিগ সরকারের উপর ক্ষুব্ধ।
আমি ন্যায়পরায়ণতা পছন্দ করি আর সেই ভাবে কথা বলি। কোনও চাকরিতেই স্বাধীন মতামতের সুযোগ নাই। যা হোক। কত মূর্খ ইউনুসের লোকগুলি। ইউনুস তার কোনও কাছের মানুষকে মরোক্কোয় রাষ্ট্রদূত হতে পাঠাবে? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনীতিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পড়াশোনা করা মানুষ হয়েও আমি প্রান্তে অবস্থান করতে চাইতাম। কারণ আমার চাওয়া ছিল লেখার জন্য পরিবেশ পাওয়া। চাকরিতে তরক্কি সাধন করা নয়। তারপরও এই মূর্খের দল বইটাকে সামনে নিয়ে এসেছে। যা হোক। যারা বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসেন তারা আমার ওয়েবসাইটে গিয়ে উপন্যাসটা পড়েন। বঙ্গবন্ধুর জীবনের প্রথম বাইশ বছরকে জানতে পারবেন। জানতে পারবেন কী করে তিনি এক জন অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে রূপান্তরিত হন। একটা দিকে ভালই হল। ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও একটা দেশের অন্ধকার সময়ে তার জন্য কাজ করার সুযোগ তৈরি হল, এটা কম কী? কয়েক জন সন্ত্রাসী সারা জাতিকে অসহায় করে রেখেছে--এই ব্যাপারে কথা বলার সুযোগ তৈরি হল--এই আর কি। যে কথা চাকরি থেকে অবসরে গিয়ে বলতাম তা শোনার জন্য মূর্খদের আর ত্বর সইছিল না--আমার কাছে এমনই মনে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, হারুন আল রশিদ ছিলেন কানাডায় ডেপুটি হাই কমিশনার। গত বছরের শুরুর দিকে তিনি মরক্কোয় রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগ পান। গত এক বছর তিনি মরক্কোয় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করলেও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে অটোয়াতেই অবস্থান করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের একটি দায়িত্বশীল সুত্র জানিয়েছে, হারুন আল রশিদকে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরে ‘অনতিবিলম্বে’পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নানা অজুহাতে দেশে ফেরা বিলম্বিত করে তিনি মরক্কো থেকে ফেব্রুয়ারীর শেষ দিকে চলে যান কানাডায়।
সেখান থেকে গত শুক্রবার তিনি এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং আমার জন্য একটি আবেদন। বিষয়: ড. ইউনূসের অধীনে বাংলাদেশের নৈরাজ্যের দিকে পতন—বিশ্বের নীরবতা বেদনাদায়ক। মানবতার বিবেকের উদ্দেশে: বাংলাদেশ আজ নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছড়িয়ে দেয়া বর্বরতার শিকার। লাখো মানুষ এক ভয়ংকর বাস্তবতার মুখোমুখি—মৃত্যু, নির্বাসন, অথবা উগ্রপন্থার কাছে আত্মসমর্পণ।’
এই পোস্টের পর সরকার রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশিদ এবং তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুত্র জানিয়েছে, একজন পেশাদার কূটনীতিকের অপেশাদার আচরণের জন্য তাকে চাকুরি থেকে বরখাস্থ করার প্রক্রিয়া চলছে।
NEWSDIPLOMATS.COM
The Latest Breaking News
Dulal Ahmed Chowdhury
Editor in Chief
Email: dulalca73@gmail.com